চিকুনগুনিয়া (ইংরেজি ভাষায়: Chikungunya) হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সাথে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এডিস ইজিপ্টি এবং এডিস অ্যালবপ্টিকাস নামক মশার দুটি প্রজাতি এই ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে। অন্য প্রজাতির মশাও এ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীকে কামড় দেয়ার পর কোন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড় দিলে তিনিও এই রোগে আক্রান্ত হন।
১৯৫২ সালে আফ্রিকার তানজানিয়ায় চিকনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটে। তানজানিয়ার কিমাকুন্দে ভাষায় এর অর্থ বাকিয়ে বা বেকে যাওয়া। রোগী হাড়ের গিটে গিটে ব্যথার কারনে হাটতে গেলে কষ্ট হয়। ফলে অধিকাংশ রোগী বেকে হাটেন বা হাটতে বাধ্য হন। বেকে হাটার প্রভাব থেকেই মূলত এ রোগের নামকরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ২০০৮ ও ২০১১ এর দিকে কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে এটি প্রথম দেখা দেয়। দীর্ঘদিন পর এবছর ভারতসহ বাংলাদেশে নতুন করে এই রোগ দেখা যায়।
১. প্রচন্ড জ্বর হয়। শরীরের তাপমাত্রা ১০৫-৬° ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে।
২. হাড়ের সংযোগস্থল ফোলা ফোলা ভাব এবং গিটে গিটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।
৩. মাথা ব্যথা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানের মাংসপেশিতে ব্যথা হয়।
৪. শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়।
১. চিকুনগুনিয়ার কোন ভ্যাকসিন বা টিকা নেই এবং কোনভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় অসুধ খাওয়া যাবে না। তবে প্যারাসিটামল খাওয়া যাবে।
২. ফল, প্রচুর পরিমাণ পানি ও তরল খাবার খেতে হবে।
৩. রোদে যাওয়া যাবে না এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
১. ঘরের জানালায় নেট ব্যবহার করে পারেন যাতে মশা আসতে না পারে।
২. মশা প্রতিরোধক স্প্রে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন লোশন কিংবা মশারি ব্যবহার করতে পারেন।
৩. মশা বংশবিস্তার করে এমন পানিযুক্ত আবদ্ধ যায়গা যেমন ফুলের টব, পানি নিষ্কাশনের পাইপ বা ড্রেন, পুরাতন ভাঙ্গা কন্টেইনার ইত্যাদিতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।
সর্বোপরি সচেতনতা ও মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করাই উত্তম পন্থা।